প্রশ্নোত্তরঃ প্রাক ইসলামি যুগে নারীদের অবস্থা কেমন ছিল? অথবা, প্রাক ইসলামি যুগে নারীদের অবস্থা কি ছিল?
ভূমিকাঃ সমকালীন ইতিহাসে উল্লিখিত যে কোন দেশের তুলনায় প্রাক ইসলামি যুগে আরবের নারীদের অবস্থা ছিল শোচনীয়। এ যুগে আরবরা নারীদের অস্থাবর সম্পত্তি ও ভোগের সামগ্রী বলে মনে করতো এবং তাদের অত্যন্ত ঘৃণার চোখে দেখত।
সমাজে নারীর অবস্থাঃ জাহেলিয়া যুগে সমাজে নারীর অবস্থা ছিল অতি নিম্নে। নারীদেরকে সে সমাজে পণ্যদ্রব্য এবং ভোগের সামগ্রী হিসেবে মনে করা হতো। তাদের আর্থসামাজিক, সম্পত্তি ভোগের কোন মর্যাদা ছিল না বলে পতিতাবৃত্তি সমাজে স্বীকৃতি পায়। নারীরা সর্বত্র পুরুষদের দ্বারা নিগৃহীত হতো।
তবে এর ব্যতিক্রমও দেখা যায়। মক্কায় বিবি খাদিজা ও আবু জেহেলের মা সে যুগে মর্যাদার অধিকারী ছিলেন।
বিবাহ প্রথাঃ ইসলাম পূর্ব যুগে বিবাহ প্রথায় সুনির্দিষ্ট কোন রীতি ছিল না। পুরুষরা একাধিক স্ত্রী গ্রহণ, ইচ্ছামতো বর্জন, অবৈধ প্রণয় এবং বহু রক্ষিতা রাখত। তেমনি নারীরাও একাধিক স্বামী বা বহুপতি গ্রহণ ও ব্যভিচারে লিপ্ত হতো। শুধু তাই নয় ভাইবোন বিয়ে ও বিমাতাকে বিয়ে করার কুপ্রথা প্রচলিত ছিল। পতিতাবৃত্তিও চালু ছিল।
কন্যা সন্তানদের জীবন্ত কবর দানঃ প্রাক-ইসলামি যুগে কন্যা সন্তান জন্মদান অভিশাপ হিসেবে বিবেচিত হতো। দারিদ্র্যের কারণে বড় হলে ব্যভিচারিনী বা শত্রু গোত্রের দ্বারা লুন্ঠিত বা অপহৃত হওয়ার ভয়ে তারা নবজাতক কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিত। এ ঘৃণার প্রথা উচ্ছেদ করে পবিত্র কুরানে ঘোষণা করা হয়েছে, তোমরা দারিদ্র্যের ভয়ে সন্তানদের হত্যা কর না, বস্তুত আমিই তাদের জীবিকা সরবরাহ করি।
উপসংহারঃ প্ররিশেষে বলা যায় যে, জাহেলি যুগে আরবে অনেক সময় কন্যার হৃদয়বিদারক চিৎকার উপেক্ষা করে পিতা তাকে জীবন্ত কবর দিত। বহু পিতা দারিদ্রের ভয়ে কন্যা সন্তানকে হত্যা হত।
Comments