ভূমিকাঃ ইসলামের ইতিহাসে মদিনা সনদের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাপক। মদিনায় বসবাসরত সম্প্রদায়সমূহের মধ্যে ঐক্য, সম্প্রীতি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য মহানবী (স) ৬২৪ খ্রি. লিখিত যে চুক্তিভবা সনদ প্রণয়ন করেন তা মদিনা সনদ। এই সনদের মাধ্যমে মদিনার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সহযোগিতা ও সমঝোতার ভিত্তিতে ধর্মীয় সহিষ্ণুতার নীতিও গৃহীত হয়।
মদিনা সনদের পাঁচটি উল্লেখযোগ্য ধারাঃ মদিনা সনদে মোট ৪৭টি ধারা বা শর্ত ছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সনদ হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। নিম্নে মদিনা সনদের পাঁচটি উল্লেখযোগ্য ধারা লিপিবদ্ধ হলোঃ
১. মদিনা সনদে স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়সমূহ (ইহুদি, খ্রিস্টান, পৌত্তলিক ও মুসলমান) সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবে এবং সকলে মিলে সাধারণ জাতি গঠন করবে।
২. হযরত মুহাম্মদ (স) নবগঠিত প্রজাতন্ত্রের সভাপতি এবং পাদাধিকার বলে মদিনার সর্বোচ্চ বিচারালয়ের প্রধান হবেন।
৩. পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় থাকবে। মুসলমান ও অমুসলমান সম্প্রদায় স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে।
৪. স্বাক্ষরকারী কোন সম্প্রদায়কে বহিঃশত্রু আক্রমণ করলে সকল সম্প্রদায় সমবেত প্রচেষ্টায় বহিঃশত্রুর আক্রমণকে প্রতিহত করবে।
৫. স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়ের মধ্যে কোন বিরোধ দেখা দিলে হযরত মুহাম্মদ (স) আল্লাহর বিধান অনুযায়ী তার মীমাংসা করবেন।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, বিশ্বের ইতিহাসে মদিনা সনদের গুরুত্ব অপরিসীম। এ সনদের মাধ্যমে মহানবী (স) এর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, কূটনৈতিক দূরদর্শিতা, ধর্মীয় সহনশীলতা, জাতি গঠন ও সমাজ সংস্কারের মানবিক গুনাবলি প্রকাশ পায়। মদিনা সনদ সর্বকালের সর্বযুগের রাষ্ট্রপতিদের জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।
Comments