ভূমিকাঃ হযরত মুহাম্মদ (স) প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার শুরু করা পর থেকেই মক্কার কাফিররা তার উপর নানা অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালায় ইসলামের প্রচার বন্ধ করার জন্য। কিন্তু তিনি সব অত্যাচার সহ্য করেও ইসলাম প্রচার চালিয়ে যায়। অতঃপর মক্কার বিধর্মী কুরাইশরা হযরত মুহাম্মদ (স) কে হত্যা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে আল্লাহর প্রত্যাদেশ প্রাপ্ত হয়ে তিনি ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করেন।
হিজরতের পরিচয়ঃ 'হিজরত' শব্দটি আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ দেশত্যাগ, ছেড়ে দেয়া, বর্জন করা, ফেলে আসা ও স্থানান্তরিত হওয়া। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে মাতৃভূমি ত্যাগ করে অন্য কোন দেশে যাওয়াকে হিজর বলে। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে হযরত মুহাম্মদ (স) এর মক্কা থেকে ইয়াসরিব বা মদিনা গমনকে হিজরত বলে।
মক্কার কাফিররা দারুল নাদওয়া নামক বৈঠকে রাসূল (স) কে হত্যার দিনক্ষণ ঠিক করলে রাসূল (স) তাদের এ ষড়যন্ত্র জানতে পারেন। হযরত মুহাম্মদ (স) হযরত আবু বকর (রা) এর গৃহে গমন করেন এবং তাকে অবগত করান। ' দারুল নাদওয়া' বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হত্যাসংঘ রাতে কুরাইশরা হযরত মুহাম্মদ (স) এর গৃহ ঘিরে রাখে। সে রাতেই হযরত আলী (রা) কে নিজ বিছানায় শুইয়ে রেখে মহানবী (স) হযরত আবুওবকর (রা) কে সাথে নিয়ে ইয়াসরিবের উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং আলী (রা) গচ্ছিত আমানত ফেরত দানের নির্দেশ দেন। তিনি ৬২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মক্কা হতে ২৫০ মাইল দূরে মদিনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায়, হযরত মুহাম্মদ (স) এর এবং ইসলামের ইতিহাসে হিজরত একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কারণ, হিজরতের ফলে মহানবীর মক্কা জীবনের অত্যাচার, লাঞ্চনার অবসান ঘটে, অন্যদিকে তিনি প্রভূত সম্মান ও সর্বক্ষেত্রে নেতৃত্ব লাভ করেন।
Comments