Skip to main content

Posts

প্রশ্নোত্তরঃ আনসার ও মোহাজের কারা? অথবা, আনসার ও মোহাজেরদের পরিচয় দাও।

ভূমিকাঃ  ইসলাম প্রচারে যে সমস্ত সম্প্রদায় সর্বোতভাবে সহযোগিতা করেছিলেন তাদের অন্যতম গুরুত্ব সম্প্রদায় হলো আনসার ও মোহাজের। নিজেদের জীবন ও সম্পদ ইসলামের স্বার্থে উৎর্সগ করে মুহাম্মদ (স)  এর উদ্দেশ্য ও স্বপ্নকে প্রতিষ্ঠিত করতে সর্বদা পাশে ছিলো। তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়া ইসলামকে সুদৃঢ় প্রসারী করা অসম্ভব হতো। মোহাজের কারাঃ  যে সকল সাহাবী নিজ জন্মভূমি মক্কা পরিত্যাগ করে মহানবীর নির্দেশে মদিনায় হিজরত করেন তারা 'মুহাজেরীন' বা শরণার্থী বলা হয়। মহানবী (স) এর প্রতি তাদের অপআনসাররিসীম শ্রদ্ধা ছিল।  তারা ইসলামের জন্য ঘরবাড়ি, আত্মীয়স্বজন ত্যাগ করে সর্বপ্রকার দুঃখ কষ্ট বরণ করেছিলেন। আনসার বা সাহায্যকারী কারাঃ যে সব নবদীক্ষিত মদিনাবাসী মক্কা হতে আগত মুসলমানদের কে আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং হযরতের সকল অবস্থাতে সাহায্য করেছিলেন, তারা 'আনসার' বা সাহায্যকারী। মদিনায় আগত মুসলমানদের আনসারগ্ণ নিজের আত্মীয় হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন এবং নিজেদের অংশ দান করেছিলেন। তাদের এই ত্যাগ ও সহযোগিতা ইতিহাসে বিরল। উপসংহারঃ  পরিশেষে বলা যায়ঃ আনসার ও মোহাজেরদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন এতই সুদৃঢ় হয়ে উঠেছিল যে

প্রশ্নোত্তরঃ মদিনা সনদের পাঁচটি শর্ত লিখ। অথবা, মদিনা সনদের উল্লেখযোগ্য পাঁচটি ধারা লিখ।

ভূমিকাঃ  ইসলামের ইতিহাসে মদিনা সনদের  গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাপক। মদিনায় বসবাসরত সম্প্রদায়সমূহের মধ্যে ঐক্য, সম্প্রীতি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য মহানবী (স)  ৬২৪ খ্রি. লিখিত যে চুক্তিভবা সনদ প্রণয়ন করেন তা মদিনা সনদ। এই সনদের মাধ্যমে মদিনার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সহযোগিতা ও সমঝোতার ভিত্তিতে ধর্মীয় সহিষ্ণুতার নীতিও গৃহীত হয়।  মদিনা সনদের পাঁচটি উল্লেখযোগ্য ধারাঃ  মদিনা সনদে মোট ৪৭টি ধারা বা শর্ত ছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সনদ হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। নিম্নে মদিনা সনদের পাঁচটি উল্লেখযোগ্য ধারা লিপিবদ্ধ হলোঃ ১.  মদিনা সনদে স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়সমূহ (ইহুদি, খ্রিস্টান, পৌত্তলিক ও মুসলমান) সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবে এবং সকলে মিলে সাধারণ জাতি গঠন করবে। ২.  হযরত মুহাম্মদ (স) নবগঠিত প্রজাতন্ত্রের সভাপতি এবং পাদাধিকার বলে মদিনার সর্বোচ্চ বিচারালয়ের প্রধান হবেন। ৩.  পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় থাকবে। মুসলমান ও অমুসলমান সম্প্রদায় স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে। ৪.  স্বাক্ষরকারী কোন সম্প্রদায়কে বহিঃশত্রু আক্রমণ করলে সকল সম্প্রদায় সমবেত প্রচেষ্টায় বহিঃশত্রুর আক্রমণকে প

প্রশ্নোত্তরঃ বাঙালিকে সংকর জাতি বলা হয় কেন? অথবা, "বাঙালি একটি সংকর জাতি।"- ব্যাখ্যা কর। অথবা, বাঙালি স্বতন্ত্র না কি সংকর জাতি?

ভূমিকাঃ  বাঙালি নরগোষ্ঠী বহুকাল ধরে বিভিন্ন জাতির সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। কালের গতি ধারায় বিভিন্ন জাতি বর্ণের রক্তপ্রবাহ বাঙালি জাতির ধমনীতে প্রবাহিত হয়েছে। এ কারণে অনেক নৃবিজ্ঞানী বাঙালি জাতিকে সংকর জাতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বাঙালি কে সংকর জাতি বলার কারণঃ  র্দীঘকাল বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে এ আদি মানুষেরা বঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বসবায়া শুরু করে৷ এসব জনগোষ্ঠী একে অপরের সাথে মিশ্রিত হয় শতকের পর শতকব্যাপী। মনে করা হয়, আদি অস্ট্রেলীয়রাই বাংলার প্রাচীনতম বাসিন্দা। বাংলাদেশের সাঁওতাল, রাজবংশী প্রভৃতি আদি অস্ট্রেলীয়দের সাথে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের জলপ্রবাহে মঙ্গোলীয়দের রক্তেরও পরিচয় পাওয়া যায়। পারস্য জাতি ভারতবর্ষে আগমনের ফলে বাঙালির রক্তে নতুন মিশ্রণ ঘটে। অনেকের ধারণা বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর উপর আর্যদের প্রভাব রয়েছে। ব্রাহ্মণ, বৈদ্য ও কায়স্থদের মধ্যে এদের প্রভাব কম-বেশি লক্ষ করা যায়। নৃবিজ্ঞানী হটন উপমহাদেশের জনগোষ্ঠীকে যে ৮ ভাগে বিভক্ত করেছেন সেগুলোর মধ্যে আলপাইন একটি। তিনি বলেছেন, আলপাইন মানব গোষ্ঠীর সাথে বাঙালি জনগোষ্ঠীর অনেক দৈহিক মিল আছে। মূলত আলপাইন আর্যভাষী ইন্দো-ইরানী গোষ্ঠী। ঐতিহাস

প্রশ্নোত্তরঃ বঙ্গ বা বাংলা নামের উৎপত্তি হয় কীভাবে? অথবা, বাংলা নামের উৎপত্তি কীভাবে হয়েছে? অথবা, বঙ্গ নামের উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা কর।

ভূমিকাঃ  বঙ্গ বা বাংলা নামের উৎপত্তি নিয়ে অনেক মতপার্থক্য রয়েছে। কারো কারো মতে, বঙ্গ নাম থেকেই বঙ্গাল এবং পরবর্তীতে বাঙালা নামের উৎপত্তি হয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, অতীতের বং নামের এক জনগোষ্ঠী  এ অঞ্চলে বসবাস করত এবং তাদের নাম অনুযায়ী অঞ্চলটি বঙ্গ নামে পরিচিত লাভ করে। আবার অনেকেই মনে করেন জলমগ্ন স্যাঁতস্যাঁতে অঞ্চলকে বঙ্গ বা বাংলা বলা হয়।  বঙ্গ বা বাংলা নামের উৎপত্তিঃ  নিম্নে বঙ্গ বা বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ ১. ভ্রমণকারীদের লেখনীতে বাংলাঃ  ইংরেজ শাসনকালে বাংলা 'বেঙ্গল' (Bengal) নামে পরিচিত ছিল। ষোলো ও সতেরো শতকে ইউরোপীয়দের লেখনীতে 'বেঙ্গালা' নামের দেশের উল্লেখ পাওয়া যায়। মার্কা পোলো বেঙ্গালা শহরের উল্লেখ করছেন। গ্যাস্টলদি তাঁর মানচিত্রে চাটিগ্রামের পশ্চিমে বেঙ্গালার অবস্থিত দেখিয়েছেন। ২. আহমদ রফিকের মতেঃ  আহমদ রফিক 'বাঙালির স্বাধীনতা যুদ্ধ' গ্রন্থে বলেছেন,'......... তবে গঙ্গারাষ্ট্র বা গঙ্গাহৃদি নামীয় স্বাধীন বাংলা-ভূখন্ড সর্বপ্রাচীন রাজ্য হিসেবে স্বীকৃত। ৩. অজয় রায়ের মতেঃ   অজয় রায় 'বাঙালির জন্ম' প্রবন্ধে বলেন, 'বঙ্গ&#

প্রশ্নোত্তরঃ হিজরত বলতে কী বুঝ? অথবা, হিজরত কী?

ভূমিকাঃ  হযরত মুহাম্মদ (স)  প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার শুরু করা পর থেকেই মক্কার কাফিররা তার উপর নানা অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালায় ইসলামের প্রচার বন্ধ করার জন্য। কিন্তু তিনি সব অত্যাচার সহ্য করেও ইসলাম প্রচার চালিয়ে যায়। অতঃপর মক্কার বিধর্মী কুরাইশরা হযরত মুহাম্মদ (স) কে হত্যা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে আল্লাহর প্রত্যাদেশ প্রাপ্ত হয়ে তিনি ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করেন।  হিজরতের পরিচয়ঃ  'হিজরত' শব্দটি আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ দেশত্যাগ,  ছেড়ে দেয়া, বর্জন করা, ফেলে আসা ও স্থানান্তরিত হওয়া। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে মাতৃভূমি ত্যাগ করে অন্য কোন দেশে যাওয়াকে হিজর বলে। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে হযরত মুহাম্মদ (স)  এর মক্কা থেকে ইয়াসরিব বা মদিনা গমনকে হিজরত বলে। মক্কার কাফিররা দারুল নাদওয়া নামক বৈঠকে রাসূল (স) কে হত্যার দিনক্ষণ ঠিক করলে রাসূল (স) তাদের এ ষড়যন্ত্র জানতে পারেন। হযরত মুহাম্মদ (স)  হযরত আবু বকর (রা) এর গৃহে গমন করেন এবং তাকে অবগত করান। ' দারুল নাদওয়া' বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হত্যাসংঘ রাতে কুরাইশরা হযরত মুহাম্মদ (স)  এর গৃহ ঘিরে রাখে।

প্রশ্নোত্তর: অমুসলিম মেয়েকে বিবাহ্ করা জায়েয কিনা?

প্রশ্নঃ মুসলিম ছেলে বিদেশ থেকে অমুসলিম মেয়ে বিয়ে করে দেশে আসলে তার ভাই/বোন ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন উক্ত বিবাহকে স্বীকৃতি দানপূর্বক অনুষ্ঠানাদি করে আনন্দ উল্লাস করে থাকে। তা কি ইসলামে গ্রহণযোগ্য? এ অবস্থায় ছেলে, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনের ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কি বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হব। উত্তরঃ  অমুসলিম ও বর্তমান ইয়াহুদি-খ্রিস্টান মহিলার সাথে কোন মুসলিম পুরুষের বিবাহ্ ও নেকাহ্ বৈধ নয়। যেহেতু পশ্চিমা দেশের বর্তমান ইয়াহুদি-খ্রিস্টান আমাদের প্রিয় রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ও পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কটূক্তি ও মান-হানিকর উক্তি করে যার দরুণ তাদেরকে আহলে কিতাব বা কিতাবীদের অন্তর্ভুক্ত বলা যাবে না। বরং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও সর্বশ্রেষ্ঠধর্ম ইসলাম সম্পর্কে তাদের কটূক্তি ও বেয়াদবীর কারণে তারা ঈমান হতে খারিজ হয়ে গেছে। তাদেরকে ঈমান-ইসলাম শিক্ষা দিয়ে মুসলিম বানিয়ে তখন মুসলিম পুরুষ তাদেরকে বিবাহ্ করতে পারবে। এর সওয়াব ও ফযিলত অনেক বেশি। কোন মুসলিম ছেলে সঠিক মাসয়ালা না জেনে বা ধর্মীয় জ্ঞান না থাকায় বিদেশ থেকে অমুসলিম মেয়েকে বিয়ে করে দেশে আসলে তার ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজনের পরম দা